অর্ডার টাইপঃ
ফরক্সে যত আলোচনা বা যত শিক্ষা সবই কিন্তু ট্রেড করে প্রফিট এর উদ্দেশে। আর এই ট্রেড মানে হল বায় অর্ডার অথবা সেল অর্ডার। ফরেক্স মার্কেটে ক্রয়-বিক্রয় এর ক্ষেত্রে বায় অর্ডার এবং সেল অর্ডার কথাগুলো বেশি রিলেভেন্ট। আমরা কখনও বায় অর্ডার করব কখনও বা সেল অর্ডার করব এটাইতো আমাদের মূল কাজ। আসুন এইবার জেনে নেয় এই অর্ডার গুলো আসলে কিভাবে কাজ করেঃ
ফরক্সে অর্ডার বলতে বোঝায় আপনি কখন ট্রেডে ডুকবেন এবং কখন ট্রেড থেকে বের হবেন। কত প্রফিট করবেন এবং কতটুকু লস মেনে নিবেন ইত্যাদি ।
EUR সেল/বিড = 1.4502 এবং USD বায়/আস্ক = 1.4505
ফরেক্স মার্কেটে প্রত্যেকটি অর্ডার এর মানে হল তার বিপরীত আরেকটি ট্রেড সয়ংক্রিয়ভাবে ঘটা। যা আপনার পরিলক্ষিত হবে না। এটাই ফরেক্স এর সিস্টেম । আবার মনে করিয়ে দিচ্ছি যে আপনি বায় এবং সেল এর মাধ্যমে মুলত একটি কারেন্সি দিয়ে আরেকটি কারেন্সিই সবসময় এক্সচেঞ্জ/বিনিময় করছেন। যেখানে আপনি এবং ব্রোকার দুটি পক্ষ।
বিডঃ হল বায়ার পয়েন্ট অব ভিউ এবং সেল হল আপনার (ট্রেডারের পয়েন্ট অব ভিউ ) অর্থাৎ বায়ার এই রেইটে বায় করতে রাজি আছে আপনি চাইলে এই রেইটে সেল করতে পারবেন।
আস্কঃ আবার আস্ক হল বায়ার পয়েন্ট অব ভিউ এবং বায় হল আপনার (ট্রেডারের পয়েন্ট অব ভিউ ) অর্থাৎ বায়ার এই রেইটে সেল করতে রাজি আছে আপনি চাইলে এই রেইটে বায় করতে পারবেন।
বায় অর্ডার প্রফিটঃ
আপনি যখন বায় অর্ডার দেন তারমানে হল কৌওট কারেন্সি সেল করে বেস কারেন্সি ক্রয় করছেন। বিষয়টি নিপুনভাবেই ঘটবে। উপরের কারেন্সি পেয়ারটি মতে, আপনি বায় অর্ডার দিয়েছেন অর্থাৎ, ১ ইউনিট বেস কারেন্সি কেনার জন্য আপনি ১.৪৫০৫ পরিমান কৌওট কারেন্সি (ডলার) দিচ্ছেন ।
পরবর্তীতে দেখলেন প্রাইস ভেলু বেড়ে ১.৪৬০৫ উঠেছে তখন আপনি ট্রেডটি ক্লোজ করে দিলেন অর্থাৎ আপনি বেস কারেন্সি সেল করে ঐ পরিমান কৌওট কারেন্সি ক্রয় করছেন। ১ EUR ১.৪৫০৫ ডলারে কিনে ১.৪৬০৫ ডলারে ক্রয়কৃত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলেন এবং ১০০ পিপস প্রফিট করলেন।
সেল অর্ডার প্রফিটঃ
আপনি যখন সেল অর্ডার দেন তারমানে হল বেস কারেন্সি সেল করে কৌওট কারেন্সি রিসিভ করছেন। এখানেও বিষয়টি নিপুনভাবে ঘটে। ধরি, এই মুহূর্তে EUR/USD মার্কেট প্রাইস ১.৪৫০২ ,আপনি বুঝতে পারলেন আগামী কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই প্রাইস আরো কমবে। এখন আপনি লাভ করতে চান, তাহলে EUR/USD সেল মোডে অর্ডার করুন, সেল এর মানে হল আপনি EUR সেল করে USD ক্রয় করছেন, তাহলে ১ EUR সেল করে আপনি পাচ্ছেন ১.৪৫০২ ডলার।
পরবর্তীতে যখন প্রাইস কমে গিয়ে ১.৪৪০২ এ নেমে আসলো তখন আপনি ট্রেড ক্লোজ করে দিন। ট্রেড ক্লোজ করার মানে হল আপনি আপনার ডলারগুলো সেল করে সেই পরিমান EUR কিনে নিলেন। তাহলে পতন হল ১০০ পিপসের অর্থাৎ আপনি কয়েক ঘন্টা আগে ১ EUR সেল করে পেলেন ১.৪৫০২ ডলার আর এখন সেই ১ EUR কেনার জন্য আপনাকে দিতে হল তারচেয়ে কম ১.৪৪০২ ডলার।
টেইক প্রফিট (TP)/স্টপ লস(SL):
আপনি যদি কোন ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ না করে আটোমেটিক ভাবে ক্লোজ করতে চান তখন আপনি টেইক প্রফিট বা স্টপ লস ব্যাবহার করতে পারেন।
মনে করুন আপনি একটি বায় ট্রেড ওপেন করেছেন ১.৩৫০০ এই ট্রেড থেকে যদি আপনি ৫০ পিপস প্রফিট করেন তাহলে আপনাকে ১.৩৫৫০ আসার পর ক্লোজ করতে হবে, এখন এমন অবস্থা যে আপনি ট্রেডের সামনে ও বসে থাকার মত সময় নাই ঠিক তখন আপনাকে ট্রেডটি মডিফাই করে ১.৩৫৫০ তে সেভ করে দিতে হবে, ব্যাস এইবার আপনাকে আর ম্যানুয়ালি ট্রেডটি ক্লোজ করতে হবে না, প্রাইস যখন ই আপনার টার্গেট রেইট টাচ করবে ট্রেডটি ৫০ পিপস প্রফিট নিয়ে নিজে নিজে ক্লোজ হয়ে যাবে।
ঠিক একই ভাবে আপনি চিন্তা করলেন যে আপনার ট্রেডটি যদি লস এ যায় তাহলে ৩০ পিপস লস করে তা অটোমেটিক ক্লোজ হয়ে যাক, সেইক্ষেত্রে ও আপনাকে ট্রেডটি মডিফাই করে আপনার ওপেন রেইট থেকে কমিয়ে অর্থাৎ ১.৩৪৭০ তে সেভ করে দিতে হবে।
আপনার সেল অর্ডার আর ক্ষেত্রে একইভাবে প্রফিট এর জন্য ওপেন প্রাইস এর নিয়ে টেইক প্রফিট সেট করুন এবং ওপেন প্রাইস এর উপরে স্টপ লস সেট করুন।
পেন্ডিং অর্ডারঃ
পেন্ডিং অর্ডার হল পুরপুরি স্বয়ংক্রিয় ভাবে আপনার ট্রেড টি ওপেন হওয়া। মনে করুন আপনি EUR/USD পেয়ারে ১.৩৫৫০ এ একটি বায় ট্রেড ওপেন করবেন কিন্তু EUR/USD তখন ১.৩৬০০ তে অবস্থান করছে এমতাবস্থায় আপনি ১.৩৫৫০ এ পেন্ডিং বায় অর্ডার প্লেইস করে রাখলেন। প্রাইস যখন ই আপনার টার্গেট রেইট
টাচ করবে তখন আপনি ট্রেডের সামনে বসে থাকেন আর নাই থাকেন স্বয়ংক্রিয় ভাবে আপনার ট্রেড টি ওপেন হওয়ে যাবে। পেন্ডিং অর্ডারে টেক প্রফিট এভং স্টপ লস সবকিছুই আটোমেটিক ভাবে করা যায়।
কিভাবে ফরেক্স কোটেশন পড়তে হয়?
প্রতিটি ট্রেডে আপনি একই সাথে একটি কারেন্সি কিনেন এবং আরেকটি বিক্রি করেন। তাই ফরেক্স মার্কেটে কারেন্সি পেয়ারের দাম কোটেশন এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
GBP/USD এর ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট নিম্নরূপঃ
স্লাশ (/) এর আগের কারেন্সিকে বলা হয় বেস (base) কারেন্সি এবং স্লাশ (/) এর পরের কারেন্সিকে বলা হয় কিউটো (quote)কারেন্সি।
এখানে GBP হল বেস (base) কারেন্সি এবং USD হল কিউটো (quote) কারেন্সি।
বাই (buy) করার সময়, এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে ১ ইউনিট বেস কারেন্সি কেনার জন্য কত ইউনিট কিউটো কারেন্সি দিতে হবে।উদাহারনস্বরূপঃ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড কেনার জন্য ১.৫১২৫ ইউ. এস. ডলার দিতে হবে।
সেল (sell) করার সময়, এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে ১ ইউনিট বেস কারেন্সি সেল করলে কত ইউনিট কিউটো কারেন্সি পাওয়া যাবে। উদাহারনস্বরূপঃ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড বিক্রি করলে আপনি ১.৫১২৫ ইউ. এস. ডলার পাবেন।
বেস কারেন্সি হল বাই ও সেল এর মূল ভিত্তি। যদি আপনি EUR/USD বাই করেন, তবে আপনি বেস কারেন্সি EUR কিনছেন এবং একই সাথে কিউটো কারেন্সি USD বিক্রি করছেন। সহজ কথায়, EUR কেনা, USD বিক্রি করা।
আপনি কারেন্সি পেয়ারটি বাই করবেন যদি আপনি বিশ্বাস করেন যে, কিউটো কারেন্সির তুলনায় বেস কারেন্সি শক্তিশালী হবে। এর আপনি সেল করবেন যদি আপনি মনে করেন কিউটো কারেন্সির তুলনায় বেস কারেন্সি দুর্বল হয়ে যাবে।
স্ক্যাল্পিং
আপনি হয়তো অনেক জায়গায় স্ক্যাল্পিং শব্দটি শুনেছেন। মূলত ছোট ট্রেড গুলোই হল স্ক্যাল্পিং। কয়েক মিনিটের ছোট ট্রেড গুলোকে স্ক্যাল্পিং বলা হয়। এই ট্রেড গুলো হতে পারে ১-২০ পিপস। আভিধানিক ভাবে ২০ পিপসের ওপরে প্রফিট হলে তাকে স্ক্যাল্পিং বলা যাবে না। সেটা সাধারন ট্রেড হয়ে যায়।
মার্কেট সবসময়ই ওঠা-নামা করে। আপনি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে কিছু পিপস লুফে নিতে পারেন।কিন্তু স্ক্যাল্পিং কিন্তু ঝুকিপূর্ণ। অনেকেই দেখা যায় কিছু না বুঝে রিস্ক নিয়ে স্ক্যাল্পিং করে। কিন্তু স্ক্যাল্পিংয়েও অ্যানালাইসিস করা উচিত। কোন ট্রেডেই অ্যানালাইসিস ছাড়া প্রবেশ করা উচিত নয়। স্ক্যাল্পিং করার সময় ট্রেন্ডের দিকে ট্রেড দেয়াই ভাল। সেক্ষেত্রে ট্রেডে লাভ করার সম্ভবনাটা তুলনামুলক ভাবে বেশি থাকে।
স্ক্যাল্পিং যেহুতু কম সময়ে করা হয়, তাই আমাদের ট্রেড করা উচিত কম সময়ের টাইমফ্রেমে। স্ক্যাল্পিং এর অনেক রুলস আছে।আপনি স্ক্যাল্পিং ট্রেড করার সময় M1, M5, M15 টাইমফ্রেম অনুসরন করতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি H4 টাইমফ্রেম অনুসরন করেন তাহলে কোন লাভ হবে না, কারন ২-১ মিনিটে মার্কেটে কি পরিবর্তন হল তা আপনি H4 চার্ট দেখে সহজে বুঝতে পারবেন না।মিনিটের টাইমফ্রেম গুলো স্ক্যাল্পিং এ বেশি সহায়ক।
অনেকেই স্ক্যাল্পিংয়ের জন্য অনেক ইন্ডিকেটর ফলো করে থাকেন। কিন্তু স্ক্যাল্পিংয়ে ইন্ডিকেটর খুব একটা কাজ করে না।কারন মার্কেটের ছোট ছোট মুভমেন্টগুলো তো আর কোন নিয়ম মেনে চলে না।
কিছু কিছু ব্রোকার আছে যারা স্ক্যাল্পিং সাপোর্ট করে না। আবার অনেক ব্রোকারের স্ক্যাল্পিং এ ২ মিনিট রুলস আছে। ২ মিনিটের আগে ট্রেড ক্লোজ করলে তা বাতিল করে দেয়ার অধিকার ব্রোকার রাখে। তাই আপনি যে ব্রোকারের সাথে ট্রেড করছেন, সেই ব্রোকারের স্ক্যাল্পিং সম্পর্কে কোন রুলস আছে কিনা আগে জেনে নিন।
কিভাবে ফরেক্স কোটেশন পড়তে হয়?
প্রতিটি ট্রেডে আপনি একই সাথে একটি কারেন্সি কিনেন এবং আরেকটি বিক্রি করেন। তাই ফরেক্স মার্কেটে কারেন্সি পেয়ারের দাম কোটেশন এর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
GBP/USD এর ফরেন এক্সচেঞ্জ রেট নিম্নরূপঃ
স্লাশ (/) এর আগের কারেন্সিকে বলা হয় বেস (base) কারেন্সি এবং স্লাশ (/) এর পরের কারেন্সিকে বলা হয় কিউটো (quote)কারেন্সি।
এখানে GBP হল বেস (base) কারেন্সি এবং USD হল কিউটো (quote) কারেন্সি।
বাই (buy) করার সময়, এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে ১ ইউনিট বেস কারেন্সি কেনার জন্য কত ইউনিট কিউটো কারেন্সি দিতে হবে।উদাহারনস্বরূপঃ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড কেনার জন্য ১.৫১২৫ ইউ. এস. ডলার দিতে হবে।
সেল (sell) করার সময়, এক্সচেঞ্জ রেট নির্দেশ করে ১ ইউনিট বেস কারেন্সি সেল করলে কত ইউনিট কিউটো কারেন্সি পাওয়া যাবে। উদাহারনস্বরূপঃ ১ ব্রিটিশ পাউন্ড বিক্রি করলে আপনি ১.৫১২৫ ইউ. এস. ডলার পাবেন।
বেস কারেন্সি হল বাই ও সেল এর মূল ভিত্তি। যদি আপনি EUR/USD বাই করেন, তবে আপনি বেস কারেন্সি EUR কিনছেন এবং একই সাথে কিউটো কারেন্সি USD বিক্রি করছেন। সহজ কথায়, EUR কেনা, USD বিক্রি করা।
আপনি কারেন্সি পেয়ারটি বাই করবেন যদি আপনি বিশ্বাস করেন যে, কিউটো কারেন্সির তুলনায় বেস কারেন্সি শক্তিশালী হবে। এর আপনি সেল করবেন যদি আপনি মনে করেন কিউটো কারেন্সির তুলনায় বেস কারেন্সি দুর্বল হয়ে যাবে।


